মানবেন্দ্রনাথ সাহার কবিতার প্রধান বিষয় প্রেম। প্রেমকে তিনি দেখেছেন মূল্যবোধ বিনির্মাণের জায়গা থেকে। শত বিপন্নতার মধ্যেও আত্মচিহ্ন খোঁজেন প্রেমে-না-প্রেমে। 'অভিমানে আমি এক জল ভরা নদী' হ'লেও যন্ত্রণাকে রূপ দেন শ্লেষে 'আমার প্রেম ছিল পাগলামী / আমার সেরে গেছে ছ্যাবলামো।' সরসতায় জানান- 'প্রেমের জন্য হ'তে পারে কবিও বজ্জাত।' আবার এক ধরনের বিষাদবোধ তাঁর মধ্যে কাজ করে। এই বিষাদ কবি ভোলেন প্রেমসম্পর্কিত মূল্যবোধের দায়বদ্ধতায়। সোল্লাসে ঘোষণা করেন ভালোবাসার কাছে তাঁর অনন্ত ঋণের কথা। বাসভূমির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে জানান, 'জীবন- বৃক্ষের কাছে আজন্ম ঋণ-আমার।'
প্রেমের তাগিদে সাবধান করেন কাউকে, কষ্টের সীমা পরিমাপ করেন আর নিজের সীমাবদ্ধতা জেনেও পরম মমতায় বলে ওঠেন- 'আমি তো সিদ্ধার্থ নই, তবু চুলে হাত ওঠে নির্ভর পরম মমতায়।' রূপ-অরূপের 'মিথ' নির্মাণ করেন 'সর্বনাশী সুদর্শনা / এমনি ক'রেই গিয়েছ ভুলে গোপন রাজা।' নষ্ট হ'তে কষ্ট হ'লেও কষ্ট প্রশমনের অনুভবে মানবেন্দ্রনাথ সাহার কবিতা বাংলা সাম্প্রতিক কবিতায় নোতুন স্বাদ বহনকারী- 'ভালোবাসার জন্য যেন / একটি জীবন যথেষ্ট নয়, দু'চারটে জীবন পেলে / রাত্রি ছেনে আলো বানায়।'