হয়তো মনের অজান্তেই মানুষের কিছু ব্যথা পৃথিবী সয়ে নেয়। যা সইতে পারে না, তা-ই ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কবি যদি বলেন, ‘আমাকে বাঁচতে না দিলে/ তুমিও বাঁচবে না পৃথিবী।’
উজ্জ্বল বড়ুয়ার মধ্যে মারাত্মক জেদ আছে। নিজেকে উপলব্ধি করার বিপুল তাগিদ। কাব্যময় ধ্যানের প্রতি তাড়না। প্রতিনিয়ত পুড়ছেন। পুড়তে পুড়তে শিখছেন। শেখার পূর্বশর্ত হচ্ছে পড়া। পড়তে পারা। প্রকৃতিকে পড়তে পারা। ‘পড়োÑ শুধু পড়ো/জানোÑ শুধু জানো যে-কোনো অবস্থায়।’ আসলে শেখার বা জানার আনন্দই এ অভিযান। অভিযান কিংবা রহস্য জীবনের প্রত্যেক মুহূর্তকে সহজ করে দেয়। গভীর বোধের কাছে নিয়ে যায়।
কবি হয়ে নয়, পাখি হয়ে উড়ে উড়ে মন-দিগন্ত ছুঁয়ে যেতে চান। ভালোবাসা, মায়া ও মোহময় পৃথিবীতে তুচ্ছ হয়ে যায় আবেগের সদাইপাতি। মানুষের চেয়ে প্রখর হয়ে মানুষ হয়ে যায়। কবি নানা সীমানায় নিজেকে নিয়ে গেছেন- স্রোতের বিপরীতে। ভেবেছেন : ‘চারিদিকে এত ভিড়/এত দুঃখ/তবুও ভাবি/তুচ্ছ ফুলটিকে/ফোঁটাতে হবে বিদ্যুতের আলোর মতো।’
এত অর্থবোধক উপলব্ধি উদ্ধার থেকে কবিতা হয়ে ওঠেছে তরঙ্গময়। উজ্জ্বল বড়ুয়ার কবিতা পড়লে মনে হবে দর্শনচিন্তার প্রতিপাঠ। প্রতি কবিতায় শান্ত-স্নিগ্ধ দুঃখনদী বয়ে যায়।
মনিরুল মনির
কবি
অন্তর্গত প্রকৃতির কোলঘেঁষে সমস্যা নিয়ে এ রচনা। নামটির সঙ্গেই এমন একটি অভিশাপ জীবনকে খাটো করে রেখেছে, ঠিক কলঙ্করেখার মতো। আর আমার ভাবনা-প্রবাহে প্রাণ দিয়েছে। আমার পরিচয় আর জানা নেই। বিশদভাবে রক্তে মাংসে, জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমি সীমিত-স্বল্প। নাম অনুসারে ভেদরেখা নেই। যতটুকু এক ধরনের কষ্টকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে- কত সৌরভ, কত অসহায়। যার ভূমিকা নতুন কোনো অনুভূতির প্রকাশে দেখার মতো। সবকিছু আস্তে আস্তে হয়, এ-সব হল বাস্তব। জীবনের দাবি থেকে উঠে আসা অনেকটা ঐতিহাসিক। জীবন সিনেমার শক্তি, কতদূর। এর বাইরে এখনো পাওয়া যায়নি জীবন। এভাবেই জন্ম নিলো বইটি সেটিই চূড়ান্ত। চিহ্নিত করতে চেষ্টা করেছিলাম মাত্র।
উজ্জ্বল বড়ুয়া