বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা ও ভাবনাবিশ্ব
বিষয় : বঙ্গবন্ধু
লেখক : শাহিদা আকতার জাহান
প্রকাশক : খড়িমাটি
প্রচ্ছদ : ইরফানুল হক জুয়েল
প্রথম সংস্করণ : ২০২০
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৬৪
দেশ : বাংলাদেশ
ভাষা : বাংলা
ISBN : 978-984-8052-93-8
যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।' অন্নদাশঙ্কর রায়ের এই কবিতা আমার প্রাণে সবসময় বাজে। আমি বিচলিত হয়ে পড়ি। মানুষের মুখের দিকে তাকালে রাজনীতির সরস ও শক্তিমান রূপ দেখি। ভাবি কীভাবে বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। নিজের জীবন দিয়ে এদেশের মানুষকে মুক্ত করেছিলেন। তাঁর কথা ভাবছি। তাঁর আদর্শকে পুঁজি করে সারাজীবন রাজনীতি করেছি, করে যেতে চাই।
আমি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করছি। স্কুল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ছাত্রলীগের ভেতরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দিতে কখন যে এই পর্যায়ে এসে গেছি টেরও পাইনি। প্রথম আমার বাবার মুখ থেকে 'জয় বাংলা' স্লোগান শুনেছি। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহক একজন মানুষ ছিলেন। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। উক্ত বিদ্যালয় থেকে তিনি পরপর তিনবার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে সম্মান অর্জন করেন। আমিও বাবার মতো একজন ভালো শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। আমিও সরকারি বিদ্যালয়ে দীর্ঘ সাত বছর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু রাজনীতি আমাকে টেনে নিয়ে আসে তৃণমূলে, সাধারণ মানুষের কাছে।
কিছুদিন শিক্ষকতা করে রাজনীতিতে সময় দেবার লক্ষ্যে এই পেশা ছেড়ে দিই। ওয়ান ইলেভেনের সময়। দলের দুঃসময়ে আমি নিজেকে আরও বেগবান করে তুলি। তৃণমূলকে বেশি বেশি সময় দিই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন, 'তৃণমূলেই আমার শক্তি, তৃণমূলের কর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে আজও বেঁচে আছি।' আমিও এই কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে দলকে সুসংগঠিত রাখার জন্য তৃণমূলেই কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অসংখ্য উন্নয়ন, তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করছি। আমি রাজনীতির ভেতরের ।
রক্ত-মাংসকে উপলব্ধি করা একজন মানুষ আশির দশকের শুরুতে রাজনীতিতে নামলেও নব্বইয়ের দশকের আমি মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হই। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত, যিনি পঁচাত্তরপরবর্তী সময়ে দলকে সাহসী ও দৃঢ়চেতা হয়ে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছিলেন, সফল শিল্প উদ্যোক্তা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর হাত ধরে আমার রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে। আমি তার একনিষ্ঠ কর্মী।
রাজনীতিতে আমার আগমনটা অনেক সংগ্রামের। আমি নারী। পুরুষের পৃথিবীতে কে আমাকে সাহস দেবে। আমি এই লড়াইয়ে এগিয়ে গেছি। অটল থেকেছি। সাহস হারাইনি। আমি কোনো রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসিনি। শিক্ষকের পরিবার থেকে এসেছি বলেই রাজনীতি আমার জন্য একটা কঠিন জায়গা হয়েছিল। তৃণমূল অর্থাৎ পাড়া গাঁ থেকে রাজনীতি করা অনেক ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। চড়াই- উতরাই পেরিয়ে এখানে আসা।
যাদের কথা বলতে চাই বিশেষ করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সফল সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী ও সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী ও জেলার সকল নেতৃবৃন্দ। ওদের শক্তি ও সাহস আমাকে রাজনীতিতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
আজ অনেকের কথা মনে পড়ছে। সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান কায়সার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল কবির চৌধুরী, বর্ষীয়ান রাজনীতিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. বি এম ফয়জুর রহমান, গণপরিষদের সদস্য এম এ সিদ্দিক (সিদ্দিক মিয়া), বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতেয়ার নূর সিদ্দিক, মরহুম ইদ্রিস (বিকম), দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকেরুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম ইউসুপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীন প্রমুখের সাহস ও আশ্রয় তখন আমাকে রাজনীতিতে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন- তাদেরকে স্মরণ করছি।
রাজনীতি করতে গিয়ে মনে হয়েছে কিছু লিখি। ছোটোবেলা থেকে একটু একটু লেখালেখি আমাকে উদ্দীপ্ত করেছে। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে মনে হলো প্রকাশ করি। দৈনিক পত্রিকাগুলোতে প্রকাশ হতে থাকলো। সকলে আমার প্রশংসা করেছে, বলেছে যেন আরো লেখি। বই করি। তাই এই বইয়ের প্রয়াস। সমস্ত লেখালেখিকে মলাটবন্দি করা। এই বইয়ের ভূমিকা লিখে দিয়ে স্নেহের বন্ধনে বেঁধেছেন প্রফেসর ড. অনুপম সেন। আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীর বিক্রম, ওএসপি, পিএসসি। আমার প্রতিটা লেখা তিনি পড়তেন। প্রায় বলতেন, বই করেন। আজ বই করছি। তিনি নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব থাকার সময়কালে দেশ ও জাতির জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। তার স্মৃতিতে
এই বইটি উৎসর্গ করছি।
খড়িমাটি বইটি প্রকাশ করে সবার সম্মুখে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
¦¦¦¦
শাহিদা আকতার জাহান
শাহিদা আকতার জাহান :
পিতা: মরহুম আলহাজ্ব ফজলুল হক
মাতা: আলহাজ্ব নুরজাহান বেগম
স্বামী: মুজিবুল হক
জন্মস্থান:
গ্রাম: জামিরজুরী, ডাকঘর: দোহাজারী
উপজেলা: চন্দনাইশ, জেলা: চট্টগ্রাম
শিক্ষা:
এম.এ (সি.ইন.এড)
বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান
কার্যনির্বাহী সদস্য, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সিনিয়র সহ সভাপতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া- বাঁশখালী উপজেলা)