SHOP BY CATEGORY

ন্যুব্জপিঠ রাত্রি : নিজাম উদ্দিন (কবিতা-২০২০)

(0 Reviews)
In stock
Estimate Shipping Time: 1 days

Sold By:
Inhouse product

Price:
৳200.000 /pc
Discount Price:
৳150.000 /pc

Quantity:

Total Price:
Share:

ন্যুজ্বপিঠ রাত্রি
বিষয় : কবিতা
লেখক : নিজাম উদ্দিন
প্রকাশক : খড়িমাটি
প্রচ্ছদ : রাজীব দত্ত
প্রথম সংস্করণ : ২০২০
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৬
দেশ : বাংলাদেশ
ভাষা : বাংলা
ISBN : 978-984-8241-03-5

নিজাম উদ্দিন, একজন আত্মবিনাশী কবি। তিনি কেন আত্মবিনাশী তা এই স্বল্প পরিসরে বলতে চাই না। কোনোদিন অন্য কোথাও বলব। তবে এটুকু নিশ্চয়ই বলব যে তিনি প্রতিদিন সকলের অজ্ঞাতে নিজেকে ধ্বংস করেই করেই নির্মাণ কিংবা অবনির্মাণ করেছিলের তার একান্ত কবিতার পথ।
এই কবিকে আমি নিজাম ভাই বলে ডাকতাম। তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ হয় ১৯৯৯ সালের মাঝামাঝি, কক্সবাজারের চকরিয়ায় আমার গ্রামে-তিনি গিয়েছিলন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের একটা পাঠচক্রে। তিনি মূলত কবিতা, মুক্তগদ্য আর গল্প লিখতেন। তিনি লিখতেন আর হারিয়ে ফেলতেন। লেখা কোথাও ছাপতেন না। কেবল আমিই কয়েকটি লেখা না বলে ছেপেছি আমার কাগজে। তাঁর প্রথম কবিতা আমি ছাপাই খুব সম্ভবত ২০০০ সালের মাঝামাঝি; 'স্বপ্নান্ধ শব্দাবলি' নামে তখন একটা কাগজ বের করতাম, সেটার প্রথম সংখ্যায়। বেশ পরিণত কবিতা। তার মানে তিনি আগে থেকেই লিখতেন। কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি তবু অনুমান করি, স্কুলে পড়ার সময় থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। কারণ তিনি পড়তেন প্রচুর শৈশব থেকেই, এই তথ্য আমি জানি। গ্রন্থভুক্ত কবিতাগুলির রচনাকাল ধরা যেতে পারে ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। তবে এই গ্রন্থের বেশির ভাগ কবিতা গত ৫/৬ বছরে লেখা। আমার ধারণা, এই কুড়ি বছরে তিনি হাজারখানেক কবিতা লিখেছেন বিভিন্ন খাতায়, কখনো ডায়ারিতে, বিচ্ছিন্ন কাগজে, সিগারেটের প্যাকেটে, বইয়ের পৃষ্ঠায়, ফোনের ইনবক্সে, ফেসবুকের মেসেঞ্জারে, ইমেইলের বডিতে, কাউকে লেখা চিঠিতে। কিন্তু সব কবিতা আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। তিনি নিজেই কবিতার খাতা হারিয়ে ফেলতেন। শ-খানেক কবিতা পেয়েছি আমরা। ওখান থেকেও সব কবিতা রাখতে পারিনি। কিছু বাদ দিতে হয়েছে। তিনি থাকলে নিজেই বাদ দিতেন এমন মনে হয়েছে আমার। তাঁর জীবদ্দশায় আমরা মাঝে মধ্যে পরস্পরের লেখাপত্র সম্পাদনা করতাম। সেই অভ্যাসবশেই গ্রন্থভুক্ত কবিতাগুলি আমি সম্পাদনা করেছি। প্রথম লাইন থেকে শব্দ নিয়ে প্রতিটি কবিতার শিরোনাম দিয়েছি। সর্বোপরি এই সংকলনের একটা নামও দিয়েছি। 'ন্যুজ পিঠ' শব্দটা তিনি পছন্দ করতেন, এই নামে একটা ছোটো কাগজ করার পরিকল্পনাও করেছিলেন সেই ২০০৪ সালে, কোনো কোনো বছর লেখকদের তালিকা করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এই কাগজে লেখার জন্যে। আর তার বেশিরভাগ কবিতাই রাতে লেখা, আমি যদ্দুর জানি। আর প্রতিটি রাতই তাঁর কাছে ঘোরাক্রান্ত আর অচেনা। তাই ন্যুজপিঠ আর রাত্রি এই দুই শব্দ মিলিয়ে নাম দিয়েছি 'ন্যুজপিঠ রাত্রি'। কারণ তিনি বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই আমাকেই তাঁর বইয়ের নাম দিতে বলতেন। কারণ তিনি নাম দিতে পারতেন না। তিনি 'সে' শব্দটাকে স্ত্রী লিঙ্গার্থে কখনো 'শে' লিখতেন। কিন্তু আমরা এই গ্রন্থে বাংলা একাডেমিকৃত আধুনিক বাংলা বানানের নিয়ম অনুসরণ করার প্রয়াস নিয়েছি। নিজাম ভাইয়ের কবিতা চিরন্তন প্রেম, কাম, বিদ্রোহ, নৈঃসঙ্গা, যন্ত্রণা, বিষাদ, স্বপ্ন, আকুতি ইত্যাকার মানবিক বিষয় চিরন্তনভাবেই ধারণ করে। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে কখনো কখনো যে কোনোভাবেই একটি বিশেষ অনুভূতির উদ্ভাবনার ক্ষেত্রে সত্য ও প্রয়োজনীয় করে তুলেছেন। এক্ষেত্রে কখনো তাঁর কবিতার বিষয় উদাসীনতা, গৃহকাতরতা, উচ্ছ্বাস, একাকিত্ব ইত্যাদি। তার কবিতায় মাঝে মাঝে কিছু শব্দ আপাতদৃষ্টিতে পরস্পরবিরোধী মনে হলেও বাক্যের সঙ্গে তাল রেখে বেশ মানিয়ে যায়। কবিতায় লিরিকের ব্যবহারে তিনি বরাবরই সাবলীল। ফলত তাঁর কবিতা পাঠে একঘেয়েমি তৈরি হয় না। তাঁর কবিতা-পাঠককে কখনো- সখনো এলোমেলো ভাবনার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।
নিজাম ভাইয়ের পুরো নাম নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। জন্ম ১৯৭৮ সালের ২০ মে, চট্টগ্রামে। মা হালিমা খানম মূলত নজরুলসংগীত শিল্পী, সংগীতাঙ্গনে বেলা খান নামে পরিচিত। বাবা নুরুল আলম চৌধুরী ছিলেন আইনজীবী। নিজাম ভাইয়ের গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় হলেও শৈশব আর কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রাম সদরের দেওয়ানবাজারের রুমঘাটার বাড়িতে। তিনি ১৯৯৫ সালে সেন্ট প্লাসিডস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৭ সালে সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম ব্যাচে লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর ছিল বিশাল বইয়ের সংগ্রহ। ২০০৬ সালে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তোলেন 'অযান্ত্রিক' নামে একটি চলচ্চিত্র সংগঠন। ২০১৫ সালের শুরুতে 'মেঘনাদ' নামে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুরু করেন এবং সেখান থেকে তিনজন লেখকের চারটি বই প্রকাশ হয়। শিক্ষার প্রসারে অনেক কাজ করেছেন-গ্রামে তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত এম এইচ নুরুল আলম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় নিজ হাতে গড়া শিশুদের স্কুল 'আনন্দলোক'-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ রাতের কোনো একসময় ঢাকায় বসুন্ধরাস্থ বাসায় খুব সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিজাম ভাই মারা যাওয়ার পর তাঁর কিছু কবিতা আমি খুঁজে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিই। সেই পোস্টের পর মনে হয় তাঁর একটা কবিতার বই প্রকাশ করা যেতে পারে। তারপর আমি কবিতা সংগ্রহ শুরু করি। যার ফলশ্রুতি এই বই। এই বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রথম কৃতজ্ঞতা তাঁর মমতাময়ী মা বেলা খানের প্রতি, তিনি অনুমতি না দিলে এই সংকলন হয়তো বের হতো না। কৃতজ্ঞতা বুবেল বিশ্বাস, পার্থ সারথি, কনা আকন্দ, সৈকত দে, নুসরাত শারমিন, সুলক পাল, মাহবুব আলম মাটি, মাশুক রহমান গালিব প্রমুখের প্রতি- এদের কেউ নানাভাবে এই সংকলনের জন্যে কবিতা সংগ্রহ করে দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ আন্তরিকভাবে পাশে থেকেছেন। বিশেষ কৃতজ্ঞতা রুদ্র অনির্বাণের প্রতি, তিনি আন্তরিকভাবে সম্পাদনার ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা রাজীব দত্তের প্রতি, তিনি যত্ন করে এই বইয়ের জন্যে প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করেছেন। কৃতজ্ঞতা আরিফুজ্জামান ও জিহান করিমের প্রতি, তারা দুজন ভালোবেসে এই কবির প্রতিকৃতি এঁকেছেন। চূড়ান্ত কৃতজ্ঞতা মনির (মনিরুল মনির, স্বত্বাধিকারী, খড়িমাটি প্রকাশন) ভাইয়ের প্রতি, যিনি গভীর মমতা নিয়ে এই বই প্রকাশ করেছেন।
¦¦¦¦
নির্ঝর নৈঃশব্দ্য
ঢাকা, জানুয়ারি ২০২০

There have been no reviews for this product yet.