জহির রায়হানের উপন্যাস : সমাজ ও চরিত্র-চিত্রণ
বিষয় : প্রবন্ধ-নিবন্ধ
লেখক : মো. করীফুল ইসলাম
প্রচ্ছদ : ফাতেমা আক্তার আলো
সংস্করণ : অমর একুশে বইমেলা ২০১৭
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৮০
ভাষা : বাংলা
আইএসবিএন : ৯৭৮-৯৮৪-৯২০০৭-৬-৫
সাহিত্যের বিভিন্ন মাধ্যমের মধ্যে উপন্যাসেই সমাজের চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে ধরা পড়ে। উপন্যাসে বাস্তব জীবনের প্রতিষ্ঠা ঘটানোর প্রথম প্রয়াস লক্ষ করা যায় তিরিশের দশকে, এরপর ষাটের দশকে এসে তা একটা পর্যায়ে উপনীত হয়। ১৯৪৭ সালে বঙ্গবিভাগের ফলে বাংলা উপন্যাস রচনার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয় ঢাকাকে কেন্দ্র করে। এক ঝাঁক সাহিত্যকর্মীর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গন তখন নতুন প্রাণের স্পর্শে স্পন্দিত হয়ে ওঠে। তাঁদেরই একজন জহির রায়হান। জহির রায়হান বাংলাদেশের গ্রামীণ এবং নাগরিক উভয় পটভূমি অবলম্বনে উপন্যাস রচনা করেছেন। এছাড়া ভাষা- আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনিই প্রথম উপন্যাস রচনা করেন। উপন্যাসে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্বমূলক চরিত্রের সমাবেশ ঘটিয়ে তিনি সমাজ জীবন ও চরিত্রের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করেছেন।
ঔপন্যাসিক জহির রায়হানের সন্ধানী দৃষ্টি সতর্কতার সঙ্গে মানুষকে, মানুষের অন্তরঙ্গ সত্তাকে অবলোকন করেছে। সে মানুষ বিভিন্ন স্তরের, বিভিন্ন শ্রেণির, বিভিন্ন পেশার। গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ে উপন্যাসের উৎপত্তি, উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত ধারা এবং এ ধারায় মুসলিম ঔপন্যাসিকদের অবস্থান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে ১৯৪৭- ৭০ সাল পর্যন্ত সময়-সীমার মধ্যে রচিত উপন্যাসসমূহের পর্যায়ক্রমিক সংক্ষিপ্ত আলোচনা রয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে জহির রায়হানের উপন্যাসে উপস্থাপিত সমাজের বিভিন্ন বিষয় এবং চরিত্রসমূহের বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ে রয়েছে উপন্যাসে ব্যবহৃত ভাষা ও শৈলী বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। পরিশিষ্টে লেখকের জীবনপঞ্জি এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থাবলির একটি তালিকা সংযোজন করা হয়েছে। গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক-শিক্ষার্থী- গবেষক ছাড়াও শিল্পসমালোচক এবং সাহিত্যানুরাগীদের ভালো লাগবে বলে আশা করি।
মো. শরীফুল ইসলাম :
১৯৭১ সালের ১৫ জুন কুমিল্লার চান্দিনা থানায় অবস্থিত লগড্ডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আবদুল কুদ্দুছ এবং মায়ের নাম রহিমা বেগম। তিনি দোল্লাই নবাবপুর প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। উল্লেখ্য যে, মাস্টার্স পর্বে তিনি জহির রায়হান এর উপন্যাসের ওপর থিসিস সম্পন্ন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সেনা শিক্ষা কোরে কমিশন লাভ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি লেখালেখি করে আসছেন। বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে প্রকাশিত গবেষণামূলক জার্নাল 'পদক্ষেপ'-এ তার বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে লাইবেরিয়ায় দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। খুলনার জাহানাবাদ সেনানিবাসে অবস্থিত জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ-এ তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে মেজর পদবিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।