অমিতাভ বচ্চন বলেছেন, '...তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি শুধু বাংলার নয়, ভারতের নয়- চলচ্চিত্রের ইতিহাসের কিংবদন্তি। একটা স্তম্ভ।' অমিতাভ বচ্চনের এই উক্তিতেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয় উদ্ভাসিত। বাংলা সংস্কৃতির বহুধা ক্ষেত্রে ছিল তাঁর অবাধ, সাবলীল এবং সার্থক বিচরণ। বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনয়ের ধারাকে তিনি অনেক উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।
শিল্পচর্চার পাশাপাশি জীবন চর্চাতেও ছিলেন পরিশীলিত, পরিমার্জিত ও পরিপূর্ণ একজন মানুষ। শিল্প ও জীবন মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল তাঁর জীবনে ।
বিশ্ব চলচ্চিত্রের সমাদৃত এই মহাশিল্পীকে তাঁর জীবন ও সৃষ্টির সুবিস্তৃত পরিধির বিভিন্ন দিক থেকে উপস্থাপন করার এক আন্তরিক প্রচেষ্টা রয়েছে এ গ্রন্থে।
.
.
শৈবাল চৌধুরী
জন্ম ১৫ জুন ১৯৬১, চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা হিসাব বিজ্ঞান (সম্মান) ও অর্থ বিজ্ঞানে (স্নাতকোত্তর)।
.
তিনি ১৯৭৯ সাল থেকে চলচ্চিত্র সংসদ চর্চার সঙ্গে সংযুক্ত। সে সময় থেকেই লেখালেখির শুরু। মূল বিষয় চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র সাহিত্যকে লেখার মূল ক্ষেত্র করে নিয়েছেন তখন থেকেই দায়বদ্ধতার সঙ্গে। দ্বিতীয় বিষয় সংগীত । প্রথম দুটি গ্রন্থ চলচ্চিত্রের পটভূমিকায় (১৯৯৬) ও রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা (১৯৯৭ ও ২০১৯, সত্যজিৎ রায়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা চলচ্চিত্র নিয়ে লেখা), তৃতীয়টি সংগীত বিষয়ক যিনি ঝড়ের কাছে রেখে গেলেন নিজের ঠিকানা (২০১৪, সলিল চৌধুরীকে নিয়ে লেখা), চতুর্থ গ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ (২০১৮), পঞ্চম গ্রন্থ স্ক্রীন (২০২০)।
.
চলচ্চিত্র নির্মাণেও নিয়োজিত। এ পর্যন্ত নির্মাণ করেছেন পাঁচটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: দীপ্ত পদাবলী (কবিয়াল ফণী বড়ুয়া), পোর্ট্রেট অফ এ ডান্সার (নৃত্যগুরু রুনু বিশ্বাস), বিনয়বাঁশী (লোকশিল্পী বিনয়বাঁশী জলদাস), বিস্মৃত অধ্যায় (মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফী) এবং মেঠো পথের গান (লোকশিল্পী আবদুল গফুর হালী) । প্রথম কাহিনীচিত্র ভূমিকম্পের পরে মুক্তি পেয়েছে ২০১৮ সালে। দ্বিতীয় কাহিনীচিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবলম্বন করে। প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে যুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্রের সঙ্গে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। বর্তমানে চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্রের সভাপতি। ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ অফ বাংলাদেশের সহসভাপতি পদে ২০১২ সাল থেকে নিয়োজিত। চলচ্চিত্র শিক্ষকতার সঙ্গেও সংযুক্ত। ২০১৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে চলচ্চিত্র বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত । পুত্র জয়, কন্যা ঠুমরী ও স্ত্রী রিতাকে নিয়ে সুখী গৃহকোণ ।
.
আলোকচিত্র : সোহম চৌধুরী জয়